Ads

সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়স বাড়বে কিনা, যা জানা গেল

 

ছবি : সংগৃহিত

সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বর্তমানে ৩০ বছর। অবশ্য মুক্তিযোদ্ধা, প্রতিবন্ধী, উপজাতি কোটা থেকে যারা সরকারি চাকরির জন্য আবেদন করেন তাদের জন্য তা ৩২ বছর।এমন অবস্থায় চাকরিপ্রত্যাশীদের বড় একটি অংশ বহুদিন ধরে বয়সসীমা ৩৫ বছর করার দাবিতে আন্দোলন করছে। কোটাপদ্ধতি তুলে দেওয়ার দাবিও ছিল তাদের। 

সম্প্রতি বিষয়টি নিয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠিয়েছিলেন শিক্ষামন্ত্রী। সে বিষয়ে রোববার সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেছেন জনপ্রশাসনমন্ত্রী অধ্যাপক ফরহাদ হোসেন।

তিনি বলেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয় চাকরিতে বয়সসীমা নিয়ে যে সুপারিশ পাঠিয়েছে তা সরকারের নীতিগত সিদ্ধান্ত। এটা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে আলোচনা করব। তিনি যে নির্দেশনা দেবেন সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ফরহাদ হোসেন আরও বলেন, চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ বছর নিয়ে সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী সংসদে কথা বলেছেন। তিনি এ বিষয়ে নিরুৎসাহিত করেছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, বয়সসীমা বাড়ালে অবসরের সময় নিয়ে সমস্যা হতে পারে। এরপরও চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বৃদ্ধি নিয়ে আলাপ আলোচনা হবে। ব্যবস্থা নেওয়া হবে বাস্তবতা বিবেচনা করেই।

এর আগে, গত ৩০ এপ্রিল সরকারি চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩০ থেকে ৩৫ বছরে উন্নীত করতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠিয়েছে শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল।

ওই চিঠিতে দেশের মানুষের গড় আয়ু বৃদ্ধি পেয়ে ৭৩ বছর হওয়ায় চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা বৃদ্ধি করা যৌক্তিক বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার ২০১৮ সালে নির্বাচনি ইশতেহারে মেধা ও দক্ষতা বিবেচনায় রেখে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বাড়ানোর বিষয়ে যুক্তিসঙ্গত ব্যবস্থা গ্রহণের কথা উল্লেখ  করেছেন া

দক্ষিণ এশিয়াসহ বিশ্বের অন্যান্য দেশে চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা :

চাকরিতে প্রবেশের বয়স নিয়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মানদণ্ড পর্যালোচনা করে দেখা যায়, বিশ্বের ১৬২টি দেশে সরকারি চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩৫ বছর, তার মধ্যে কিছু দেশে তা উন্মুক্ত। 

দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত পৃথিবীর সবচেয়ে জনবহুল দেশ হয়েও বিভিন্ন রাজ্যভেদে চাকরিতে আবেদনের সর্বোচ্চ বয়সসীমা ৪৫ বছর, মালদ্বীপে ৪৫ বছর, শ্রীলঙ্কায় ৪৫ বছর, নেপালে ৩৫ বছর, আফগানিস্তানে ৩৫ বছর। 

ভারতসহ বিশ্বের উন্নত রাষ্ট্রগুলো অনেক গবেষণা করেই চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা আন্তর্জাতিক মানদণ্ড মেনে ন্যূনতম ৩৫ বছর করেছে। 

ভারতসহ বিশ্বের সব উন্নত রাষ্ট্র এই নীতি অনুসরণ করেই বেকারত্ব কমিয়েছে এবং মেধা রপ্তানি করে রেমিটেন্স বাড়িয়েছে। 

চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩০ করে রাখার কারণে দেশে দক্ষ জনবল, গবেষক গড়ে উঠছে না এবং বাংলাদেশের ছাত্রছাত্রীরা আন্তর্জাতিক চাকরির বাজারে প্রবেশ করতে পারছে না। আমাদের উচিত সফল ও উন্নত বিশ্বকে অনুসরণ করা। 

পৃথিবীর দ্বিতীয় জনবহুল, এক নাম্বার অর্থনীতি ও উদীয়মান পরাশক্তি রাষ্ট্র চীনেও চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৪০ বছর পর্যন্ত।

এমতাবস্থায়,  চাকরিতে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে আবেদনের সর্বোচ্চ বয়সসীমা আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুয়ায়ী সর্বনিম্ন ৩৫ বছর এবং বিশেষ দক্ষতামূলক ক্ষেত্রে উক্ত বয়সসীমা উন্মুক্ত করার বিষয়টি বিবেচনা পূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করা হলো।



Post a Comment

0 Comments