![]() |
ছবি : সংগৃহিত |
চলছে গরমের মৌসুম । তাপমাত্রা বাড়ার সাথে সাথে হাইড্রেটেড থাকা সামগ্রিক সুস্থতার জন্য একটা বড় চ্যালেন্জ । কাঁচা আমে রয়েছে উচ্চ জলের উপাদান যা গরমে আপনাকে রাখবে সতেজ এবং হাইড্রেটেড । তাছাড়া , ডিহাইড্রেশন এড়াতে কাঁচা আম ঘামের মাধ্যমে হারিয়ে যাওয়া তরল পূরণ করতে সাহায্য করে।
বাজারে এখন পাওয়া যাচ্ছে কাঁচা আম । দামও নাগালে। গরমের এ সময় কাঁচা আমের এক গ্লাস শরবত সারা শরীরে এনে দিতে পারে প্রশান্তি। কাজেই, প্রাণটাকে শীতল আর শরীরটাকে চাঙা করতে প্রতিদিন পান করুন কাঁচা আমের এক গ্লাস শরবত ।
কাঁচা আমের পুষ্টিগুণ
কাঁচা আমে রয়েছে ভিটামিন সি, কে, এ, বি ৬, ফোলেট ও অন্যান্য প্রচুর পুষ্টি উপাদান। কাঁচা আম ম্যাগনেশিয়াম এবং পটাশিয়াম সমৃদ্ধ। অন্যান্য ফলের মতো মিষ্টি না হওয়ায় এতে চিনি নেই বললেই চলে। তাই যারা ডায়েট করছেন বা ডায়াবেটিস রোগী তারা অনায়াসে খেতে পারবেন কাঁচা আম।
পুষ্টিবিদেরা বলেন, কাঁচা বা পাকা দুই ধরনের আমই শরীরের জন্য ভালো ৷ আম কাঁচা বা পাকা যে অবস্থায়ই থাকুক না কেন, শরীরের জন্য এর কোনো নেতিবাচক দিক নেই বললেই চলে। কাঁচা আম বা আমের রসে পটাশিয়াম থাকায় প্রচণ্ড গরমে তা শরীর ঠান্ডা রাখতে সহায়তা করে।
কাঁচা আমের গুণ প্রসঙ্গে পুষ্টিবিদেরা আরো বলেন, ১০০ গ্রাম কাঁচা আমে পটাশিয়াম থাকে ৪৪ ক্যালরি। এ ছাড়া ৫৪ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি ও ২৭ মিলিগ্রাম ম্যাগনেশিয়াম থাকে।
কাঁচা আমের আরও কিছু গুণের কথা জেনে নিন :
কাঁচা আমে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি। ভিটামিন সি অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টের কাজ করে। তাই বয়স ধরে রাখতে কাঁচা আম খেতে পারেন।
কাঁচা আমে রয়েছে ভিটামিন ই, যা শ্বেত রক্তকণিকার কার্যকারিতা বাড়ায়, পাশাপাশি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতেও সাহায্য করে।
অ্যামাইলেস নামক পাচক এনজাইম কাঁচা আমে থাকায়, হজমে সহায়ক। অ্যাসিডিটি, কোষ্ঠকাঠিন্য ও বদহজমের সমস্যা কমাতে বেশ উপকারী এই কাঁচা আম ।
অতিরিক্ত ঘাম হলে শরীর থেকে বেড়িয়ে যায় সোডিয়াম ক্লোরাইড এবং আয়রন। কাঁচা আম এগুলো বের হতে বাধা দিয়ে ডিহাইড্রেশন থেকে শরীরকে সুরক্ষিত রাখে।
কাঁচা আমে পটাশিয়াম থাকার কারণে তা শরীরকে ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করে৷ এ কারণে শরীরে ঘাম কম হয়। গরমে ক্লান্তিও দূর হয়
ভিটামিন এ চোখের স্বাস্থ্য রক্ষায় খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আর কাঁচা আম ভিটামিন এ সমৃদ্ধ। লুটেইন ও জিয়াজ্যান্থিন নামক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট চোখের রেটিনা ভালো রাখে। আর এসব উপাদানও পেয়ে যাবেন কাঁচা আমে।
কাঁচা আমে আছে আয়রন, যা রক্তস্বল্পতার সমস্যা সমাধানে বেশ উপকারী। আয়রন সমৃদ্ধ খাবার চুল, আর ত্বকের জন্যও উপকারী।
অনেকেরই সকালে উঠে বমি বমি ভাব হয়। বিশেষ করে অন্তঃসত্ত্বা যাঁরা। এ সমস্যা দূর করতে পারে কাঁচা আম।
কাঁচা আম একটি শক্তিশালী ফল যা নিঃশ্বাসের দুর্গন্ধ দূর করে, মাড়ি থেকে রক্তক্ষরণের চিকিৎসা করে এবং এটি দাঁতের গহ্বরের ঝুঁকি কমায়। শক্ত ও পরিষ্কার দাঁত পেতে চাইলে কাঁচা আম খাওয়া শুরু করুন।
কাঁচা আমে থাকা প্রয়োজনীয় বি ভিটামিন নিয়াসিন এবং ফাইবারের সমৃদ্ধি হৃৎপিণ্ডের স্বাস্থ্যকে উন্নীত করে। এটি কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে, রক্ত সঞ্চালন উন্নত করে এবং কার্ডিওভাসকুলার রোগের ঝুঁকি প্রতিরোধ করে।
কাঁচা আম যকৃতের স্বাস্থ্যের উন্নতির জন্য এবং যকৃতের রোগের চিকিত্সার জন্য দুর্দান্ত। এটি পিত্ত অ্যাসিডের নিঃসরণকে উদ্দীপিত করে এবং শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থগুলিকে পরিষ্কার করে চর্বি শোষণ বাড়ায়।
গরমে ঘামাচির সমস্যা হয় অনেকের। কাঁচা আম খেলে এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া সহজ হয়। কারণ কাঁচা আমে থাকা কিছু উপকারী উপাদান ঘামাচি থেকে বাঁচতে সাহায্য করে।
কীভাবে খাবেন
তীব্র গরমে কাঁচা আমের স্বাদ এনে দিতে পারে স্বস্তি। কাঁচা আমের শরবত, চাটনি, আম দিয়ে ডাল, মোরব্বা , কাঁচা আমের ভর্তাসহ আরও নানা পদ তৈরি করে খাওয়া যায়। তাছাড়া সারা বছর খাওয়ার জন্য করে রাখতে পারেন আমের আচার।
সতর্কতা
কথায় আছে, অতিরিক্ত কোনো কিছু ভালো নয়। কাঁচা আম খাওয়ার ক্ষেত্রেও বিষয়টি মাথায় রাখতে হবে। অতিরিক্ত পরিমাণে কাঁচা আম খেলে ডায়রিয়া হওয়ার আশঙ্কা থাকে৷ কাঁচা আমের কষ মুখে লাগলে ও পেটে গেলে মুখ, গলা ও পেটে সংক্রমণ হতে পারে। তাই এ ব্যাপারে সাবধান।
0 Comments