শুক্রবার (১০ মে) নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনের পক্ষে ভোটাভুটি হয়েছে। এতে জাতিসংঘের ১৯৩ দেশের মধ্যে দেশটির পক্ষে বাংলাদেশসহ ১৪৩ দেশ ভোট দিয়েছে। প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দেয় ৯ টি দেশ। আর ভোটদানে বিরত ছিল ২৫টি দেশ। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, এ প্রস্তাব ফিলিস্তিনিকে জাতিসংঘের পূর্ণ সদস্যপদ দেয় না, তবে কেবল তাদের যোগদানের যোগ্য হিসাবে স্বীকৃতি দেয়।
ফিলিস্তিনকে জাতিসংঘের পূর্ণ সদস্যপদ দিতে না পারলেও শুক্রবারের প্রস্তাব পাসের ফলে চলতি বছরের সেপ্টেম্বর থেকে কিছু বাড়তি সুবিধা পাবে দেশটি। যেমন সাধারণ পরিষদে অন্যান্য সদস্য দেশের মতো ফিলিস্তিনের জন্য সিট বরাদ্দ থাকবে। তবে তারা কোনো প্রস্তাবে ভোট দিতে পারবে না।
এর আগে, গত সপ্তাহে নিরাপত্তা পরিষদে স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠন এবং তাদের পূর্ণ সদস্যপদ দেওয়ার একটি প্রস্তাব উত্থাপিত হয়। সেখানে যুক্তরাষ্ট্রের ভেটোর কারণে প্রস্তাবটি গৃহীত হয়নি।
এরপর ফিলিস্তিনিকে স্বীকৃতি এবং পূর্ণ সদস্যপদ দিতে নিরাপত্তা পরিষদে আবারও ভোট আয়োজনের জন্য সাধারণ পরিষদে প্রস্তাব তোলা হয়।
আর এই প্রস্তাবের পক্ষে জাতিসংঘের সদস্যভুক্ত চারভাগের তিন ভাগ দেশ ভোট দিয়েছে।
সাত মাসের বেশি সময় ধরে গাজা যুদ্ধ চলছে। ইসারয়েলি হামলায় সেখানে ৩৪ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে।
অন্যদিকে হামাসের হামলায় ১২০০ ইসরায়েলি নিহত হয়েছে। ফিলিস্তিন-ইসরায়েল সংঘাত নিরসনে এই যুদ্ধের মধ্যে আবারও দ্বিরাষ্ট্রীয় সমধানের বিষয়টি আলোচনায় আসছে।
দ্বিরাষ্ট্রীয় সমধানের মূল কথা হলো ইসরায়েল ও ফিলিস্তিন নামে দুটি স্বাধীন রাষ্ট্র পাশাপাশি অবস্থান করবে।
কাতারভিত্তিক গণমাধ্যম আল জাজিরা জানিয়েছে, আজকের এই ভোটটি ফিলিস্তিনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ছিল। কারণ, এটির মাধ্যমে তারা বেশকিছু অধিকার পেয়েছে।
ফিলিস্তিন এখন থেকে সাধারণ পরিষদে প্রস্তাব উত্থাপন বা এতে সমর্থন এবং সংশোধন করতে পারবে।
সেই সঙ্গে ফিলিস্তিনি প্রতিনিধি এখন থেকে সদস্য দেশগুলোর আসনে বসতে পারবেন এবং ফিলিস্তিন সক্রিয়ভাবে অধিবেশনে অংশগ্রহণ করতে পারবে।
এ ছাড়া বিশ্বের বেশিরভাগ দেশ যে ফিলিস্তিনের পক্ষে রয়েছে, সেটি এই ভোটের মাধ্যমে আবারও প্রকাশ পেয়েছে।
‘বিশ্ব ফিলিস্তিনি জনগণের পাশে দাঁড়িয়েছে’- এমন মন্তব্য করে জাতিসংঘের ভোটকে স্বাগত জানিয়েছেন ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস।
তিনি বলেন, প্রস্তাব পাস থেকে প্রমাণিত হয়েছে যে বিশ্ব ফিলিস্তিনের জনগণের অধিকার ও স্বাধীনতার সঙ্গে এবং ইসরায়েলের দখলদারির বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছে।
0 Comments